🌞 কার্ডবোর্ড বা মোটা কাগজ দিয়ে একটি সানডিয়াল বা সূর্যঘড়ি তৈরি করার সহজ উপায়
( ঘরে বসেই সূর্যের সাহায্যে সময় মাপার উপায়)
⭐ গ্রীক জ্যোতির্বিদ টলেমি ও দিকনির্দেশক সূর্যঘড়ির বিবর্তন
গ্রীক জ্যোতির্বিদ টলেমি আকাশ ও গোলক নিয়ে যে গবেষণা করেছিলেন, তা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার সময়ে তিনি আকাশকে একটি বিশাল গোলকের মতো ধরে নিয়ে গ্রহ-নক্ষত্রের গতি বুঝতে চেষ্টা করেন।
১৪ শতকের শেষদিকে চৌম্বকীয় কম্পাস উদ্ভাবিত হওয়ার পর, ছোট ও বহনযোগ্য দিকনির্দেশক সূর্যঘড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়। এর আগে সূর্যঘড়ি ছিল বড়, স্থির এবং নির্দিষ্ট জায়গায় বসানো।
যখন আমরা সূর্যঘড়ির কথা ভাবি, বেশিরভাগ সময় আমাদের চোখে ভেসে ওঠে—
• বাগানে লাগানো একটি অনুভূমিক সূর্যঘড়ি,
• মাঝখানে একটি পেডেস্টাল বা স্ট্যান্ড,
• এবং তার ওপরে রাখা ডায়াল।
সঠিকভাবে বসানো সূর্যঘড়িতে যে সূচানো অংশটি ছায়া তৈরি করে, তাকে বলা হয় গনোমন।
এ গনোমন সবসময় উত্তর দিকে নির্দেশ করে এবং এটি যে কোণে বাঁকা থাকে তা স্থানটির অক্ষাংশ অনুযায়ী ঠিক করা হয়।
আপনি যদি নিরক্ষীয়ভাবে মাউন্ট করা টেলিস্কোপ ব্যবহার করেন, তবে এই ধারণাটিকে সহজেই চিনতে পারবেন—
কারণ সূর্যঘড়ির গনোমন এবং টেলিস্কোপের পোলার অক্ষ একইভাবে পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষের সমান্তরাল থাকে।
এই অনুভূমিক মডেলের একটি জনপ্রিয় রূপ হলো উল্লম্ব সূর্যঘড়ি।
গির্জা বা বড় ভবনের দক্ষিণমুখী দেয়ালে প্রায়ই এই ধরণের সূর্যঘড়ি দেখা যায়। এগুলো ভবনের দেয়ালে ঝুলানো থাকে এবং সূর্যের ছায়া দেখে সময় বোঝায়।
🔧 প্রয়োজনীয় উপকরণ
• একটি গোল কার্ডবোর্ড বা মোটা কাগজ
• একটি পেন্সিল/কলম/পাতলা কাঠি
• কম্পাস (দিক নির্ধারণের জন্য)
• স্কেল
• গ্লু বা টেপ
• সূর্যের আলো পাওয়া যায় এমন জায়গা
🧭 ধাপ–১:
গোল বেস তৈরি করা কার্ডবোর্ডকে একটি গোল আকারে কেটে নাও। এটি তোমার সানডিয়ালের ভিত্তি হবে। চাইলে এর উপর সুন্দর ডিজাইন করতে পারো।
📍 ধাপ–২:
কেন্দ্র চিহ্নিত করা গোল বোর্ডের মাঝখানে একটি পেন্সিল বা কাঠি সোজা ভাবে দাঁড় করিয়ে লাগিয়ে দাও। এই কাঠিটি হলো গনোমন, যেটি ছায়া তৈরি করবে।
🌏 ধাপ–৩:
উত্তর দিক নির্ধারণ কম্পাস ব্যবহার করে বোর্ডের উপর উত্তর (N) দিক চিহ্নিত করো। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সানডিয়ালের সময় নির্ভর করবে সঠিক দিক নির্ধারণের উপর।
🕰 ধাপ–৪:
দুপুর ১২টার ছায়া আঁকা রোদ থাকা অবস্থায় দুপুর ১২টার সময় বোর্ডটি এমনভাবে রাখো যাতে কাঠির ছায়া উপরের চিহ্নিত উত্তর দিকের দিকে পড়ে। তখন ছায়া যেখানে পড়বে সেই রেখাটি ১২টা হিসেবে মার্ক করো।
⏱ ধাপ–৫:
প্রতি ঘণ্টায় ছায়া মার্ক করা এখন প্রতি ঘণ্টায় (১টা, ২টা, ৩টা...) বোর্ডটি একই জায়গায় রেখে কাঠির যে ছায়া পড়বে সেটা পেন্সিলে এঁকে রেখো। এভাবে তোমার সানডিয়ালের সব ঘণ্টার চিহ্ন তৈরি হবে।
🎉 ধাপ–৬:
সাজিয়ে নাও তোমার সানডিয়াল সব সময় লাইন ঠিক হলে বোর্ডটি রঙ করে সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে পারো। এখন রোদে রাখলেই ছায়ার দিক দেখে সময় জানা যাবে।